Level: Primary — Author: Writix
Level: Primary • Duration: N/A
Author: Unknown
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড
৬৯-৭০, মতিঝিল বাণিজ্যিক এলাকা, ঢাকা-১০০০
কর্তৃক প্রকাশিত
[প্রকাশক কর্তৃক সর্বসত্ব সংরক্ষিত]
প্রথম সংস্করণ রচনা ও সম্পাদনা
© মাহবুবা নাসরীন
© আব্দুল মালেক
© ইশানী চক্রবর্তী
ড. সেলিনা আক্তার
শিল্প সম্পাদনা
হাশেম খান
প্রথম প্রকাশ: সেপ্টেম্বর ২০১২
পরিমার্জিত সংস্করণ: সেপ্টেম্বর ২০১৫
AGT: জুলাই ২০২৩
পরিমার্জিত সংস্করণ: অক্টোবর ২০২৪
ডিজাইন
জাতীয় শিক্ষান্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড, বাংলাদেশ
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায়
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক বিনামূল্যে বিতরণের জন্য
Page 4
প্রসঙ্গকথা
প্রাথমিক শিক্ষার ভিত্তিভূমি। প্রাথমিক শিক্ষা সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যমুখী ও পরিকল্পিত না হলে গোটা শিক্ষাব্যবস্থাই দুর্বল হয়ে পড়ে। এই বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে ২০১০ সালের শিক্ষানীতিতে প্রাথমিক স্তরকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। বিশ্বের উন্নত দেশসমূহের সাথে সংগতি রেখে প্রাথমিক স্তরের পরিসর বৃদ্ধি এবং TESS করার উপর জোর দেওয়া হয়েছে। সামাজিক ও অর্থনৈতিক স্তর এবং ধর্ম-বর্ণ কিংবা লৈঙ্গিক পরিচয় কোনো শিশুর শিক্ষাহরণের পথে যেন বাধা না হয়ে দাঁড়ায় এ বিষয়েও বিশেষ দৃষ্টি রাখা হয়েছে।
প্রাথমিক শিক্ষাকে যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) একটি সমস্বিত শিক্ষাক্রম গ্রহণ করেছে। এই শিক্ষাক্রমে একদিকে শিক্ষাবিজ্ঞান ও উন্নত বিশ্বের শিক্ষাক্রম অনুসরণ করা হয়েছে, অন্যদিকে বাংলাদেশের চিরায়ত শিখন-শেখানোর সুল্যবোধকেও গ্রহণ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে শিক্ষাকে অধিকতর জীবনমুখী ও ফলপ্রসূ করার প্রয়াস বাস্তব ভিত্তি পেয়েছে। বিশ্বায়নের বাস্তবতায় শিশুদের মনোজাগতিক অবস্থাকেও শিক্ষাক্রমে বিশেষভাবে বিবেচনায় রাখা হয়েছে।
শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান-উপকরণ হলো পাঠ্যপুস্তক। এই কথাটি মাথায় রেখে এনসিটিবি প্রাথমিক স্তরসহ প্রতিটি স্তর ও শ্রেণির Maryse প্রণয়নে সবসময় সচেষ্ট রয়েছে। প্রতিটি লেখনি ও সম্পাদনার ক্ষেত্রে শিক্ষাক্রমের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। শিশুমনের বিচিত্র কৌতুহল এবং ধারণক্ষমতা সম্পর্কে রাখা হয়েছে সজাগ দৃষ্টি। শিখন-শেখানোর কার্যক্রম যেন একমুখী ও ক্লান্তিকর না হয়ে আনন্দের অনুষঙ্গ হয়ে ওঠে, সেদিকটি শিক্ষাক্রম এবং পাঠ্যপুস্তক রণয়নে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আশা করা যায়, প্রতিটি বই শিশুদের সুষম মনোদৈহিক বিকাশের সহায়ক হবে। একই সাথে তাদের দক্ষতা, অভিযোজন সক্ষমতা, দেশপ্রেম ও নৈতিক মূল্যবোধ অর্জনের পথকেও সুগম করবে।
বাংলাদেশের সমাজ, পরিবেশ, ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, মৌলিক চাহিদা, শিশুদের অধিকার ও দায়িত্ব-কর্তব্য, সমাজে সকল মানুষের সাথে সহযোগিতা ও সহমর্মিতাবোধ, সুনাগরিক হয়ে ওঠার গুণাবলি অর্জন, অন্যের পেশার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া, সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার ও সংরক্ষণ, সামাজিক পরিবেশ ও দূষণ, জনসংখ্যা ও জনসম্পদ ইত্যাদি বিষয়গুলো বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে চতুর্থ শ্রেণির “বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়" পাঠ্যপুস্তকে বিশেষভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
বইটি রচনা, সম্পাদনা ও পরিমার্জনে যেসব বিশেষজ্ঞ ও শিক্ষক নিবিড়ভাবে কাজ করেছেন তাদের বিশেষভাবে কৃতজ্ঞতা জানাই। কৃতজ্ঞতা জানাই তাদের প্রতিও, যারা অলংকরণের মাধ্যমে বইটিকে শিশুদের জন্য চিন্তাকর্ষক করে তুলেছেন। ২০২৪ সালের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে প্রয়োজনের নিরিখে পাঠ্যপুস্তকসমূহ পরিমার্জন করা হয়েছে। এক্ষেত্রে ২০১২ সালের শিক্ষাক্রম অনুযায়ী প্রণীত পাঠ্যপুস্তকটিকে ভিত্তি হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। সময় স্বল্পতার কারণে কিছু ভুলত্রুটি থেকে যেতে পারে। সুধিজনের কাছ থেকে যৌক্তিক পরামর্শ ও নির্দেশনা পেলে সেগুলো গুরুত্বের সাথে বিবেচনায় নেওয়া হবে।
প্রফেসর ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান
চেয়ারম্যান
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড, বাংলাদেশ ২০২৪
Page 5
শিক্ষক নির্দেশনা
বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় পাঠ্যপুস্তক শিশুদের পারিপার্শ্বিক জগৎ সম্পর্কে অবহিত করার লক্ষ্যে প্রণয়ন করা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা যাতে এই বিষয়টির মাধ্যমে মূল্যবোধ, জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জন করতে পারে সেদিকে লক্ষ্য রেখেই শিক্ষাক্রম তৈরি করা হয়েছে।
- বাংলাদেশের সংস্কৃতি, মুক্তিযুদ্ধ, ধর্ম ও রাজনৈতিক বিষয় সম্পর্কিত পাঠ শিক্ষার্থীদের মূল্যবোধ গঠনে সহায়ক হবে।
- ভূগোল, ইতিহাস ও সমাজ পরিচিতি শিক্ষার্থীদের এ বিষয়গুলোতে জ্ঞান অর্জনে সাহায্য করবে।
- একই সাথে সামাজিক আচরণ ও প্রাকৃতিক অবস্থা সম্পর্কিত তথ্য সংগঠন ও বন্ধুত্বপূর্ণ বিশ্লেষণ করার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা অনুসন্ধান ও গবেষণা করার দক্ষতা অর্জন করবে।
বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় পাঠ্যপুস্তকটির সাথে শিক্ষার্থীরা এখন পরিচিত। কিন্তু তারা এখনও পঠনে সাবলীলতা অর্জন করেনি এবং পাঠ্যপুস্তকের অনুশীলনী করতে অত্যন্ত আগ্রহী নয়। তাই পাঠ্যপুস্তকটিকে শিশুদের জীবন উপযোগী করতে শিক্ষকের সহায়তা আবশ্যক। এজন্য বইটির সকল পাঠ ও নির্দেশিত কাজ চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য আকর্ষণীয়, বয়স উপযোগী এবং ব্যবহারযোগ্য করতে যথাসাধ্য চেষ্টা করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের বিষয়ভিত্তিক শব্দের জ্ঞান বৃদ্ধির লক্ষ্যে বইয়ের শেষে শব্দভান্ডার দেওয়া হয়েছে।
অধ্যায়
এই পাঠ্যপুস্তকে ১৬টি অধ্যায় আছে। অধ্যায়গুলোকে সমাজ, ব্যক্তির আচরণ, ভূগোল, ইতিহাস ও সংস্কৃতি ইত্যাদি বিষয়বস্তুতে বিভাজন করা হয়েছে। শিক্ষাক্রমে বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়টির জন্য প্রতিটি অধ্যায়ে নির্দিষ্ট অর্জন উপযোগী যোগ্যতা নির্ধারিত রয়েছে। এই অর্জন উপযোগী যোগ্যতাগুলো সামনে আছে।
বিষয়বস্তু
প্রতিটি অধ্যায়কে ২ থেকে ৫টি বিষয়বস্তুতে ভাগ করা হয়েছে। প্রতিটি বিষয়বস্তুতে একটি বিশেষ দিককে নির্দিষ্ট করে তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিটি বিষয়বস্তুকে দুটি পৃষ্ঠায় বিস্তৃত করা হয়েছে, যেখানে পাঠ উপস্থাপন করা হয়েছে বাম দিকের পৃষ্ঠায় এবং নির্ধারিত কাজ ও প্রশ্ন দেওয়া হয়েছে ডান দিকের পৃষ্ঠায়। এর ফলে শিক্ষক সহজেই পাঠের সাথে শিখন কার্যক্রমকে সমন্বয় করতে পারবেন এবং শিক্ষার্থীরাও সহজেই নির্দেশিত কাজের জন্য প্রয়োজনীয় পাঠ পাশের পৃষ্ঠায় খুঁজে পাবে।
পাঠ
১৬টি অধ্যায়ের প্রত্যেক বিষয়বস্তুকে একাধিক পাঠে বিভাজন করা হয়েছে। যে কোনো বিষয়বস্তুতে প্রথম পাঠে শিক্ষক সেই বিষয়টির মূল পাঠ্যাংশ বই থেকে পড়াবেন ও বলার কাজ (এসো বলি) করাবেন এবং দ্বিতীয় পাঠে লেখার কাজ (এসো লিখি), সংযোজনের কাজ (আরও কিছু করি) এবং যাচাই (যাচাই করি) এর কাজ করাবেন।
Page 6
শিক্ষাক্রমে:
বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ের অধ্যায়ভিত্তিক শিখনফল দেওয়া আছে। এই শিখনফলগুলো শিক্ষক সংস্করণে প্রতিটি পাঠের সাথে নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে শিক্ষক প্রতিটি শিখনফল অর্জন হচ্ছে কি না তা লক্ষ রাখতে পারবেন।
নির্ধারিত কাজ:
বইটিতে মূল পাঠ্যাংশের পাশাপাশি প্রশ্ন ও কাজের সমান গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, কারণ এসব শিখন প্রক্রিয়ার একটি অপরিহার্য অংশ। শিক্ষার্থীরা শুধু পড়ে এবং মুখস্থ করার উপর নির্ভর করে শিখতে পারে না। তারা প্রশ্নোত্তর, সংগঠন এবং অনুসন্ধানের মাধ্যমে শেখে।
শিক্ষকের জন্য পরামর্শ থাকবে, শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক ধারণা বা জ্ঞানের উপর ভিত্তি করে পাঠ শুরু করে প্রয়োজনমতো চারপাশের উদাহরণ ব্যবহার করা। প্রতিটি বিষয়বস্তুর 'ওপর প্রশ্ন ও কাজ ক্রমান্বয়ে সহজ থেকে কঠিন করা হয়েছে এবং এর মাধ্যমে নিম্নলিখিত দক্ষতাগুলোর অনুশীলন ও সুজনশীলতার বিকাশ হবে।
এসো বলি: বলার কাজে নিজস্ব ধারণা প্রকাশ করতে এবং অনেকটা অনানুষ্ঠানিকভাবে এ দক্ষতা অর্জন করতে শিক্ষার্থীদের অনুপ্রাণিত করতে হবে। 'এসো বলি'-তে শিক্ষার্থীদের শ্রেণির কাজে সবার সাথে আলোচনায় অংশগ্রহণ করতে উৎসাহিত করতে হবে এবং শিক্ষকের কাজ হবে শিক্ষার্থীদের উত্তর বোর্ডে লিখে দেওয়া। বোর্ডের লেখা দেখে শিক্ষার্থীরা সঠিক বানান শিখতে পারবে, যা তাদের লেখার কাজে সহায়তা করবে।
এসো লিখি: লেখার কাজ ক্রমান্বয়ে সহজ থেকে কঠিন করা হয়েছে। যেমন, শিক্ষার্থীরা প্রথমে তালিকা তৈরি করবে, এরপর তথ্য বিভাজন ও শ্রেণিকরণের কাজ করবে এবং পরে বাক্য সম্পন্ন করার কাজ করবে।
আরও কিছু করি: এই অংশের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বিষয়বস্তুর ওপর জ্ঞান আরও বৃদ্ধি পাবে, যেমন—অজ্ঞান বা গবেষণার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বিষয়ের আরও গভীরে প্রবেশ করতে পারবে। যদিও "আরও কিছু করি"-এর কাজগুলো পরিচালনা করতে কিছু সময় বেশি লাগবে, তারপরও এগুলো শিক্ষার্থীদের জন্য একটি স্মরণীয় শিখন অভিজ্ঞতা হয়ে থাকবে।
যাচাই করি: গাঠনিক মূল্যায়নের জন্য প্রতিটি বিষয়বস্তুর শেষে “যাচাই করি” অংশ দেওয়া হয়েছে। এখানে বহুনির্বাচনি প্রশ্ন, শব্দস্থান পূরণ, মিলকরণ এবং সংক্ষিপ্ত উত্তর-প্রশ্ন রয়েছে। এ ছাড়াও পুর্তকের শেষে নমুনা প্রশ্ন দেওয়া আছে।
শিক্ষার্থীদের কাজে বৈচিত্র্য আনার জন্য বিভিন্ন ধরনের দলীয়, জোড়ায় ও একক কাজ সংযোজন করা হয়েছে। শিক্ষক সিদ্ধান্ত নেবেন, কোন কাজের জন্য কী উপায়ে শিক্ষার্থীদের দলে ভাগ করা হবে। এর ফলে শিক্ষার্থীরা আগে থেকেই বুঝতে পারবে কোন কাজের জন্য কীভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে ও দলে ভাগ হতে হবে।
মূল্যায়ন:
সবশেষে, শব্দভান্ডরের আগে শিক্ষার্থীদের সামষ্টিক মূল্যায়নের সহায়তার জন্যে পাঠ্যপুস্তকের শেষে অধ্যায়ভিত্তিক কিছু নমুনা প্রশ্ন যোগ করা হয়েছে।
Duration: N/A
XP Points: 0
Participants: 0